শ্রীকৃষ্ণ ভজন গীত-krishna bhajan bangla Geet.
শ্রীকৃষ্ণ ভজন গীত-krishna bhajan bangla Geet.
(১)
এইবার করুণা কর বৈষ্ণব-গোসাঞি।।
পতিতপাবন তোমা বিনে কেহ নাই।
যাঁহার নিকটে গেলে পাপ দুরে যায়।।
এমন দয়াল প্রভু কেবা কোথা পায়?
গঙ্গার পরশ হইলে পশ্চাতে পাবন।
দর্শনে পবিত্র কর–এই তোমার গুণ।।
হরিস্থানে অপরাধে তারে হরিনাম।
তোমা-স্থানে অপরাধে নাহিক এড়ান।।
তোমার হৃদয়ে সদা গোবিন্দ-বিশ্রাম।
গোবিন্দ কহেন-মম বৈষ্ণব-পরাণ।।
প্রতি জন্মে করি আশা চরণের ধূলি।
নরোত্তমে কর দয়া আপনার বলি।।
(২)
শচীর আঙ্গিনায় নাচে বিশ্বম্ভর রায়।
হাসি হাসি ফিরি ফিরি মায়েরে লুকায়।।
বয়নে বসন দিয়া বলে লুকাইনু।
শচী বলে বিশ্বম্ভর আমি না দেখিনু।।
মায়ের অঞ্চল ধরি চঞ্চল চরণে।
নাচিয়া নাচিয়া যায় ‘খঞ্জন গমনে।।
বাসুদেব ঘোশ কয় অপরূপ শোভা।।
শিশুরূপ দেখি হয় জগমন লোভা।।
(৩)
জীব জাগ, জীব জাগ, গোরাচাঁদ বলে।
কত নিদ্রা যাও মায়া-পিশাচীর কোলে।।১।।
ভজিব বলিয়া এসে সংসার-ভিতরে।
ভুলিয়াি রহিলে তুমি অবিদ্যার ভরে।।২।।
তোমারে লইতে আমি হৈনু অবতার।
আমি বিনা বন্ধু আর কে আছে তোমার।।৩।।
এনেছি ঔষধি মায়া নাশিবার লাগি’।
হরিনাম মহামন্ত্র লও তুমি মাগি’।
ভকতিবিনোদ প্রভু-চরণে পড়িয়া।
সেই হরিনাম-মন্ত্র লইল মাগিয়া।।৫।।
(৪) শ্রী শ্রী পঞ্চতত্ব দর্শন(krishna bhajan)
শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য প্রভু দয়া কর মোরে।
তোমা বিনা কে দয়ালু জগৎ-সংসারে।।
পতিতপাবন হেতু তব অবতার।
মো সম পতিত প্রভু না পাইবে আর।।
হা হা প্রভু নিত্যানন্দ! প্রেমানন্দ সুখী।
কৃপাবলোকন কর আমি বড় দুঃখী।।
দয়া কর সীতাপতি অদ্বৈত গোসাঞি।
তব কৃপাবলে পাই চৈতন্য-নিতাই।।
(৫) শ্রী শ্রী রাধামাধব দর্শন
গোবিন্দমাদিপুরুষং তমহং ভজামি (তিনবার)
বেণুং ক্বণন্তমরবিন্দদলায়তাক্ষং
বর্হাবতংসমসিতাম্বুদসুন্দরাঙ্গম্।
কন্দর্পকোটিকমনীয়বিশেষশোভং
গোবিন্দমাদিপুরুষং তমহং ভজামি।।
অঙ্গানি যস্য সকলেন্দিয়বৃত্তিমন্তি
পশ্যন্তি পান্তি কলয়ন্তি চিরং জগন্তি।
আনন্দচিন্ময়সদুজ্জ্বলবিগ্রহস্য
গোবিন্দমাদিপুরুষং তমহং ভজামি।।
(৬)
জয় জয় জগন্নাথ শচীর নন্দন।
ত্রিভুবন করে যার চরণ বন্দন।।
নীলাচলে শঙ্খ-চক্র-গদা-পদ্ম-ধর।
নদীয়া নগরে দন্ড-কমন্ডলু কর।।
কেহ বলে-‘পুরবেতে রাবণ বধিলা।’
গোলোকের বৈভব-লীলা প্রকাশ করিলা।।
শ্রীরাধার ভাবে এবে গোরা অবতারঃ।
‘হরে কৃষ্ণ’-নাম গৌর করিলা প্রচার।।
বাঁসুদেব ঘোষ বলে করি যোড় হাত।
যেই গৌর সেই কৃষ্ণ সেই জগন্নাথ।।
(৭)
মানস, দেহ, গেহ, যো কিছু মোর।
অর্পিল তুয়া পদে, নন্দকিশোর।।১।।
সম্পদে-বিপদে, জীবনে-মরণে।
দায় মম গেলা, তুয়া ও-পদ বরণে।।২।।
মারবি রাখবি-যো ইচ্ছা তোহারা।
নিত্যদাস-প্রতি তুয়া অধিকারা।।৩।।
জন্মাওবি মোএ ইচ্ছা যদি তোর।
ভক্তগৃহে জনি জন্ম হউ মোর।।৪।।
কীট জন্ম হউ যথা তুয়া দাস।
বহির্মুখ ব্রহ্মজন্মে নাহি আশ।।৫।।
ভুক্তি-মুক্তিস্পৃহা বিহীন যে ভক্ত।
লভইতে তাঁক সঙ্গ অনুরক্ত।।৬।।
জনক, জননী, দয়িত, তনয়।
প্রভু, গুরু, পতি–তুহুঁ সর্বময়।।৭।।
ভকতিবিনোদ কহে, শুন কান!
রাধানাথ! তুহুঁ হামার পরাণ।।৮।।
(৮)
জয় রাধে, জয় কৃষ্ণ, জয় বৃন্দাবন।
শ্রীগোবিন্দ গোপীনাথ মদনমোহন।।
শ্যামকুন্ড রাধাকুন্ড গিরি-গোবর্ধন।
কালিন্দী যমুনা জয় জয় মহাবন।।
কেশীঘাট বংশীবট দ্বাদশ কানন।
যাঁহা সব লীলা কৈল শ্রীনন্দনন্দন।।
শ্রীনন্দযশোদা জয়, জয় গোপগণ।
শ্রীদামাদি জয়, জয় ধেনুবৎসগণ।।
জয় পৌর্ণমাসী, জয় আভীর নাগরী।।
জয় জয় গোপীশ্বর বৃন্দাবন-মাঝ।
জয় জয় কৃষ্ণসখা বটু দ্বিজরাজ।।
জয় রামঘাট, জয় রোহিণীন্দন।
জয় জয় বৃন্দাবনবাসী যত জন।।
জয় দ্বিজপত্নী, জয় নাগকন্যাগণ।
ভক্তিতে যাঁহারা পাইল গোবিন্দচরণ।।
শ্রীরাসমন্ডল জয়, জয় রাধাশ্যাম।
জয় জয় রাসলীলা সর্ব মনোরম।।
জয় জয়োজ্জ্বল রস সর্বরস-সর।
পরকীয়া ভাবে যাহা ব্রজেতে প্রচার।।
শ্রীজাহ্নবাদাপদ্ম করিয়া স্মরণ।
দীন কৃষ্ণদাস কহে নাম-সংকীর্তন।।
সখীবৃন্দে বিজ্ঞপ্তি-(কৃষ্ণ ভজন)
রাধাকৃষ্ণ প্রাণ মোর যুগলকিশোর।
জীবনে মরণে গতি আর নাহি মোর।।
কালিন্দীর কূলে কেলি-কদম্বের বন।
রতন বেদির উপর বসাব দু’জন।
শ্যামগৌরী-অঙ্গে দিব(চুয়া) চন্দনের গন্ধ।
চামর ঢুলাব কবে, হেরিব মুখচন্দ্র।।
গাঁথিয়া মালতীর মালা দিব দোঁহার গলে।
অধরে তুলিয়া দিব কর্পূর-তাম্বুলে।।
ললিতা-বিশাখা-আদি যত সখীবৃন্দ।
আজ্ঞায় করিব সেবা চরণারবিন্দ।।
শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য প্রভুর দাসের অনুদাস।
সেবা অভিলাষ করে নরোত্তম দাস।।