Harano Premer Golpo 2022. হারানো প্রেমের গল্প ২০২২

 Harano Premer Golpo 2022. হারানো প্রেমের গল্প ২০২২

Harano Premer Golpo 2022. হারানো প্রেমের গল্প ২০২২

ভালবাসার গল্প পড়তে কার না ভালো  লাগে? তাই ত আজ একটি  সেরা ভালোবাসার গল্প নিয়ে হাজির হলাম। যারা অনলাইনে বাংলা প্রেমের গল্প খুজে বেড়াচ্ছেন, ভালোবাসার গল্প পড়তে পছন্দ করেন তাদের জন্য, ভালো মানের বাংলা গল্প এখানে রয়েছে। আশা করি এই ব্লগের সব গুলো  গল্প না পড়ে যাবেন না।

আশিক, আমার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে।

– মানে?

– হ্যাঁ, সত্যি কথা।

সামনে বসে আছে নিধি। আশিকের সামনে।

একটা লাল রঙের শাড়ি পরে। মুখে ক্রিম অথবা পাউডার মাখা। নিধি এমনিই সুন্দর দেখতে।

আজ আরও বেশি লাগছে।

বিয়ের সাজে সাজলে সব মেয়েকেই সুন্দর লাগে।

তবে একটু আগে নিধি যে কথাটা বলল, তা শুনবার পর এই সুন্দর টুকুই অসহ্য লাগছে আশিকের কাছে।

– কি বলছ তুমি? মাথা খারাপ?

– মাথা খারাপ হবে কেন? মা বাবা বিয়ে ঠিক করেছে, আমিও করে ফেলছি।

– আমার কি হবে?

– তুমিও একটা বিয়ে করবা। আমার থেকে সুন্দরী।

– আমি তো তোমাকে বিয়ে করব।

– তোমার বিয়ের বয়স হইছে? মেয়েদের বিয়ের বয়স হয়, ২০ এর পর। আর ছেলেদের হয়,বউকে ভালভাবে রাখার মত উপার্জন করার পর।

– এতো তাড়াতাড়ি বিয়ে করবে কেন?

আমি তো আর কয়েক বছর পরেই এস্টাব্লিশড হয়ে যাব।

-আমার পরিবার এতদিন অপেক্ষা করবে না।

– নিধি, এই নিধি।

– বল।

– একটু বোঝাও না বাড়িতে। আমি তোমাকে ভালবাসি অনেক।

– আমিও বাসতাম।

– এখন বাস না?

– ভেবে দেখলাম, তোমার মত বেকারের সাথে প্রেম করার চেয়ে,বাবা মায়ের পছন্দ করা ছেলেকে বিয়ে করে ফেলা ভাল।

– এভাবে বোলোনা প্লিজ। খুব কষ্ট হয়। আমি তোমাকে ভালবাসি। আমাকে আর একবছর সময় দাও, আমি ঠিক ব্যবস্থা করে ফেলব

একটা।

– তুমি এক বছরে তো বের হতেই পারবেনা পাস করে। কিসেরব্যবস্থা করবে?

– করে নেব ঠিক। দরকার হলে সারাদিন টিউশনি করাব।

– টিচার আমার পছন্দ না।

– প্লিজ নিধি। একটু মা বাবাকে বলে বিয়েটা ভেঙ্গে দাওনা।

– কেন ভাঙব? আমার বাবা মা ছেলেকে অনেক পছন্দ করেছে।

তাছাড়া আমারও পছন্দ হয়েছে। এতো এতো টাকা তার।

– ওওও।

– কি হল?

– কিছু না। আচ্ছা কর বিয়ে তাকেই। আমার সাথে দেখা করতে  এসেছ কেন?

– তুমি আমার একমাত্র ভালবাসার মানুষ। এতো বছর প্রেম করলাম, আর এই সুখবর দিতে আসব না?

– হ্যাঁ, ভাল। দেয়া হয়েছে। যাও এখন।

– আর একটু বসে থাকি তোমার পাশে?

– বসে থেকে কি হবে?

– তাড়িয়ে দিচ্ছ?

– না।

– তবে? – কিছুনা।

আশিক মুখ নিচু করে বসে আছে। নিধির সামনে। বুকের ভিতর কেমন যেন লাগছে।

এতদিনের ভালবাসার মানুষটা অন্য কারও হয়ে যাবে।

কেমন হাসি মুখে কথাগুলো বলল। এতদিনের ভালবাসা শুধু কি তাহলে আশিকের একারই ছিল?

নিধি ভালবাসেনি?

ভালবাসলে,

এভাবে অন্যের জন্য বউসেজে এসে, বিয়ের কথা হেসে হেসে বলতে পারত?

পারত না। একদম না। একদম ভালবাসে নি।

কিন্তু আশিক ভালবাসে।

এভাবে হারিয়ে যেতে আশিক দেবে না।

আঁকড়ে ধরবে নিধিকে।

জাপটে ধরে বলবে, তুমি শুধু আমার।

অন্য কারও জন্য বউ সাজতে পারবে না।

তবে এই সাহসটুকুই আশিকের নেই।

এই হারিয়ে যাবার সময়টাতেও শুধু কষ্ট পেতে পারছে।

চোখ ভেজাতে পারছে।

নিধি এসে একটু পাশ ঘেঁষে বসল।

এখনও মুখটা হাসি হাসি। এই হাসিতে গা জ্বলে যাচ্ছে।

আস্তে করে আশিকের আঙ্গুলের উপর নিধি আঙ্গুল রাখল। আশিক হাত সরিয়ে নিল।

অন্যের বউ কেন আশিককে ছোবে?

নিধি চোখ বড়-বড় করে বলল, বাব্বা! আমার ভালবাসার মানুষটার

দেখি  রাগও হয়। খুব রাগ হচ্ছে আমার উপর?

মারতে ইচ্ছা করছে? মার!

– রাগ করিনি।

– তবে অভিমান করেছ?

– না তাও করিনি।

– তবে কি করেছ ?

– কিছুই করিনি।

– ভালও বাসনি?

আশিক থমকে গেল এই কথায়। কি বলবে?

ভাল তো সে বাসেই। নিধি জানে। আবার নতুন করে শোনার কি?আশিক তাও বলল -হ্যাঁ বাসি।

নিধি হাসতে শুরু করল। শব্দ করে।

লেকের জলের ভিতর সে শব্দ ঢেউ এর মত ছড়িয়ে পড়ছে।

এতোটা হাসির কথা আশিক বলেনি।

আশিককে নিয়ে সবসময় হাসে নিধি।

খুব কান্না পাচ্ছে আশিকের।

কেঁদে ফেলা কি উচিৎ?

কাঁদলে কি নিধি আশিকের হয়ে যাবে? হয়ত হবে না।

নিধির হাসি থামছে না।

হাসতে হাসতেই নিধি বলল, তুমি এতো বোকা কেন?

– কেন কি হয়েছে?

– বোকা না তো কি? আমি এতগুলো মিথ্যা বললাম, আর তুমি সবগুলো বিশ্বাস করে চোখ ভিজিয়ে, মুখ ফুলিয়ে বসে আছ।

– মানে?

– মানে কিছুই না। আমার বিয়েটিয়ে কিছুই না।

আরে গাধা,বিয়ের কথা হলেই কি মানুষ শাড়ি পরে বসে থাকে?

আর আমার বিয়ে হলে আজ, তুমি আগে জানতে না?

আর তোমার কাছে কেন বসে থাকব বিয়ে হলে?

– তাহলে লাল শাড়ি পরেছ কেন?

– পরতে মানা?

– না।

– তাহলে? আজ পহেলা ফাল্গুন তাই পরলাম। তোমার জানার কথা না। মেয়েরা এসব বেশি জানে।

– পহেলা ফাল্গুনে মেয়েরা হলুদ শাড়ি পরে।

– তাই? এতো জানো? আমি পরলাম লাল। কোন সমস্যা?

– না।

আশিকের ঠোঁটের কোণে, হঠাৎ করেই একটু খানি হাসি ফুটে উঠেছে।

নিধি বলেই যাচ্ছে, দেখো, বাবা মাকে সোজা বলে দিয়েছি।

পড়াশুনা শেষের আগে, নো বিয়ে।

আমার উপর মা-বাবা জোর করবেনা।

অনেক ভয় পায় আমাকে।

আর ততদিনে, তুমি একটা ব্যবস্থা করে ফেলবে।

বিয়ের কথা বললাম, আর তুমি মুখ ফুলিয়ে বসে রইলা।

অধিকার খাটাতে পারলে না? আমার উপর কোন অধিকার নাই তোমার?

– আছে।

– তবে? ধরে রাখবে,হারিয়ে যেতে দেবেনা। এরপর থেকে যেন ভুল

না হয়।

– হবে না।

– আমার কবিতা কই?

– পকেটে।

– শুনাও। পকেটে রেখেছ কেন?

আশিক একটা কাগজ বের করল, পকেট থেকে।

গল্পের সাথে ইদানীং কবিতাও লেখে। যা খুশি ছন্দ মিলায়।

বের করেই পড়তে লাগল,

নিধি কবিতা শুনছে আশিকের মুখে।

আশিক বলা শেষ করেই, হঠাৎ করে নিধিকে জড়িয়ে ধরল।

আমি তোমাকে ভালবাসি।

তোমাকে অন্য কারও হতে দেবনা। তুমি শুধু আমার।

অন্য কারও জন্য বউ সাজতে পারবেনা।

নিধি চুপচাপ আশিকের স্পর্শ অনুভব করছে।

বোকা ছেলেটা হঠাৎ করেই চালাক হয়ে গেছে।

নিজের অধিকার বুঝে নিতে চায়,আঁকড়ে ধরতে চায়।

ভালোবাসায় আঁকড়ে ধরার টান না থাকলে, হয়ত একসময় হারিয়ে যায়। এই বোকা বোকা ছেলে বা মেয়ে গুলোও ভালবেসে বড় স্বার্থপর হয়ে যায়। নিজের জিনিসের এক ফোঁটাও কাউকে দিতে চায় না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *