Romantic Valobasar Golpo Ep 2(রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প পর্ব ২)
মেয়ে ঃ শুনছেন আমি অসুস্থ হয়ে গেছি
ছেলে ঃ কি হয়েছে শরীর খারাপ?
মেয়ে ঃ না
ছেলে ঃ জর, বমি, কাশি, গলা ব্যাথা?
মেয়ে ঃ না
ছেলে ঃ তাহলে আরো সিরিয়াস কিছু?
ডাক্তার ডাকবো?
মেয়ে ঃ এবার ইচ্ছে করছে সত্যিই নিজের মাথার চুল ছিড়ি। তাকে সুন্দর করে বল্লাম আমার পিরিয়ড হয়েছে আমার স্যানিটারি ন্যাপকিন লাগবে।
সে কতোক্ষন হাবলার মতো তাকিয়ে বলল
ছেলে ঃ দাড়ান আম্মুকে বলছি
মেয়ে ঃ সে যেতে লাগলে আমি তার পাঞ্জাবি টেনে ধরে কিড়মিড় করে বল্লাম
এটা আম্মুকে বলার কি আছে? যান দোকান থেকে কিনে নিয়ে আসেন। আর শুনুন আনার সময় দরকার হলে পলিথিনে ঢেকে নিয়ে আসবেন।
সে মাথা নেড়ে বেরিয়ে গেল। একঘন্টা পর সে দরজা নক করে বলল।
ছেলে ঃ আসবো?
Romantic Valobasar Bangla Golpo EP -6 (রোমান্টিক ভালোবাসার বাংলা গল্প পর্ব -৬)
মেয়ে ঃ আমি বিরক্ত হয়ে বললাম।
নিজের রুমেই তো এসেছেন। নক করার কি আছে।
ফোন টিপছিলাম। তার দিকে তাকাতেই বললাম এটা কি? পলিথিনের দুটো ফুটোয় ওর চোখ দুটি দেখা যাচ্ছে আর হাতে একটা পলিথিনে স্যানোরা,ফ্রিডম, মানে যত রকমের স্যানিটারি ন্যাপকিন আছে সব চকচক করে তাকিয়ে আছে।
আমি তার গোবর ভরা কল্লা থেকে পলিথিন সরিয়ে বললাম আপনার মাথা পলিথিনে ঢাকতে বলিনি। প্যাডের প্যাকেট গুলো কালো পলিথিনে মুড়িয়ে আনতে বলেছিলাম। নিজের মাথা ঢেকে সব দেখিয়ে দেখিয়ে এনেছে।
সব কোম্পানির ন্যাপকিন নিয়েই মনে হয় চলে এসেছে। আর কিছু বললাম না সোজা ওয়াশরুমে ঢুকলাম। গোসল সেরে বের হয়ে দেখি ওর সাত বছরের ভাগ্নিটা গুবলুটার গলা ধরে ঝুলছে। আর গুবলুটা হেসে ওর সাথে খেলছে, কথা বলছে। দেখেই বেশ অভিমান হলো। সবার সাথেই ঠিক কেবল আমার ব্যাপারেই কেমন যেন একটা হয়ে যায়। অথচ আমি তার বিয়ে করা বউ। বাইরে যেতেই আম্মুর সামনে পরলাম। তিনি হেসে বললেন ঠিক আছো?
আমি বললাম জি আম্মু।
মা ঃ কোন সমস্যা হলে বলো। তোমার পেটে ব্যাথা হয় নি পিরিয়ডে?
মেয়ে ঃ মাঝে মধ্যে হয়।
আচ্ছা আজকে আর রান্নাঘরে যাওয়া লাগবে না। আমি সব সামলে নেবো।
মেয়ে ঃ এটা বলেই চলে গেলেন। একটু পরে ভাবি এসে এক কাপ গরম চা হাতে দিয়ে বলল এটা খাও। দেখবে আরাম লাগবে। ভাইয়ের বোধহয় প্যাড কেনার ব্যাপারে আন্দাজ নেই। আমাকে বলো। আমি বললাম জি আচ্ছা ঠিক আছে। আমার ইচ্ছে করছে ঐ গুবলুটাকে কটকট করে চিবিয়ে খাই। আমার পিরিয়ড এর খবর রাস্ট্র করে দিয়েছে। রুমে গিয়ে দেখলাম সে নেই, থাকলে আজকেই ওর হালুয়া বানিয়ে রুটি খেতাম।
মেয়ে ঃ এক সপ্তাহ পর সবাই আমাদের হানিমুনে পাঠালো। আমি মুখ গোমড়া করে বসে রইলাম বাসে।
হানিমুন না ঘোড়ার আন্ডা। যেখানে রাতে জরিয়ে ধরলে রোবটের মতো শক্ত হয়ে থাকে সেখানে হানিমুনে গেলে তাকে খুজেই পাওয়া যাবে না। বাসে তেমন কোন রকম কথা বার্তা হলো না। শুধু মাত্র আমার ঘুমে ঢুলতে থাকা মাথাটা ওর কাধে পরেছিলো। কাপতে কাপতে সোজা করে দিয়েছে।
এরপর আর ঘুম আসেনি দুচোখে। হানিমুন করলোমুন হয়ে গেলো শুরুতেই। কক্সবাজার এসেছি হোটেলে ঢুকেই ফ্রেশ হয়ে নিলাম। সে তখনো ব্যাগ হাতাচ্ছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম কিছু খুজচ্ছেন?
সে হাবলার মতো তাকিয়ে রইলো। আমি আবার বললাম গোসলে যাবেন তো?
সে উপর নিচ মাথা নাড়ল। আমি তার যাবতীয় জিনিস হাতে দিয়ে বললাম, এই নিন। এগুলোই তো খুজচ্ছিলেন। তার কান অবধি লাল হয়ে গেলো। সে ছোট্ট করে একটি ধন্যবাদ দিয়েই ওয়াশরুমে পালিয়ে গেল। আসতে আসতে যেহেতু রাত হয়ে গেছে তাই আর বের হলাম না। সারাদিন বাসে বসে থেকে শরীর ম্যাজম্যাজ করছে। গিয়েই বিছানায় শুয়ে পরলাম। চোখ বন্ধ করে আছি। সে টুকটুক করে এসে শুয়ে পড়লো।
আমার ওর বুকে ঘুমানোর অভ্যাস হয়ে গেছে এতোদিনে। সে এসে শুতেই মাথাটা বালিশ থেকে ওর বুকে এলিয়ে দিলাম। সে জমে গেল। আমি পাত্তা না দিয়ে ঘুম। রোদের আলো চোখে পড়তেই তাকালাম। সকাল হয়ে গেছে। তাকিয়ে নিজেকে বালিশে আবিষ্কার করে বেশ মনোক্ষুণ্ণ হলাম। চারপাশে তাকিয়ে ওকে পেলাম না। আমাকে রেখেই বিচে চলে গেল? আমিও ফ্রেশ হয়ে নিচে চলে গেলাম। সেখানে খাবার খাওয়ার জায়গা আছে। আমি সেখান থেকে ব্রেকফাস্ট করে বেরিয়ে গেলাম।
সমুদ্রের ফুরফুরে বাতাসও আমার ভারী মন হালকা করতে পারলো না। হাটতে হাটতে এক লোকের সাথে দেখা। সেও ঘুরতে এসেছে। আমি তার সাথে হেসে হেসে কথা বলছি। হটাৎ সে কোথা থেকে উদয় হয়ে আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে সোজা হোটেলে। আআমি জিজ্ঞেস করলাম কি হলো?
বাড়ি ফিরবো।
আমি অবাক হয়ে বললাম। কালকেই তো মাত্র এলাম।
তৈরি হন এখনই রওনা দেব।
রাগ হলো বেশ। আসার সময় এক বর্নও কথা বলিনি। মনটা খারাপ হয়ে রইলো। কিন্তু বুঝলাম না কেন এমন করলো। বাসায় আসার পর বুঝতে পারলাম লোকটার সাথে কথা বলায় সে এমন করলো। জেলাস ফিল করলো নাকি।