এজেন্ট ব্যাংকিং কি? এজেন্ট ব্যাংকিং এর সুবিধা অসুবিধা কি কি? What is agent banking,?

এজেন্ট ব্যাংকিং কি? এজেন্ট ব্যাংকিং এর সুবিধা অসুবিধা কি কি? 

এজেন্ট ব্যাংকিং কি? এজেন্ট ব্যাংকিং এর সুবিধা অসুবিধা কি কি?

এজেন্ট ব্যাংকিং কি? 

বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকিং খাতকে গ্রাহকের জন্য আরো সহজতর করার এই এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা চালু করে। মুলত এজেন্ট ব্যাংকিং হল কোন ব্যাংকের মাধ্যমে নিয়োগকৃত এজেন্ট কে দিয়ে একটি নির্দিষ্ট এলাকার জনগণকে সীমিত আকারে ব্যাংকিং সেবা প্রদান করাই হল এজেন্ট ব্যাংকিং। 

এজেন্ট ব্যাংকিং এর মাধ্যমে একজন এজেন্ট তার  গ্রাহকে ব্যাংকের সকল সুবিধা সীমিত আকারে  প্রদান করতে পারবেন। এক্ষেত্রে গ্রাহকে সরাসরি কোনো ব্যাংকের শাখায় যেতে হবে না। গ্রাকের হয়ে ওই এজেন্টই সব কাজ করে দিবে।

এজেন্ট ব্যাংকিং এর যাত্রা কবে ও কিভাবে শুরু হয়েছিল? 

এজেন্ট ব্যাংকিং সিস্টেমের এর ইতিহাস অনেক পূরনো। এজেন্ট ব্যাংকিং সিস্টেমটি সর্বপ্রথম ব্রাজিলে চালু হয়েছিলো। এর পর আস্তে আস্তে সারা পৃথিবীতে এটি ছড়িয়ে পড়েছে। আর তারই অংশ হিসাবে ২০১৩ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক এই এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা চালু করেন। 

তবে ব্যাংক এশিয়ার বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে এই এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা চালু করার অবদান রেখেছিলো। বর্তমানে বাংলাদেশের অনেকগুলো ব্যাংক এই এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা চালু করেছে। এর জনপ্রিয়তা দিন দিন এতোটাই বাড়ছে যে সবগুলো ব্যাংক এখন এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা চালু করার কথা ভাবছে।

এজেন্ট ব্যাংকিং এর এজেন্ট হতে কি কি লাগে?

কোন ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা গ্রাহকের কাছে প্রদান করার জন্য আগে সেই ব্যাংকের এজেন্টশীপ নিতে হবে। এই এজেন্টশীপ নেওয়ার জন্য ব্যাংকের কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। যেমন ঃ

আপনাকে বাংলাদেশের একজন বৈধ নাগরিক হতে হবে। সাথে আপনার আইডি কার্ড বা পাসপোর্ট থাকতে হবে। 

আপনার অবশ্যই ট্রেড লাইসেন্স সহ একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থাকতে হবে। সেটি ভাড়া কিংবা নিজের মালিকানাধীন হতে পারে। 

সমাজ সেবা অধিদপ্তরে নিবন্ধিত হতে হবে।

সমবায় সমিতি আইন ২০০১ অনুযায়ী নিবন্ধিত সমবায় সমিতি থাকতে হবে।

সরকারি প্রতিষ্ঠানের শাখা /ইউনিট অফিস।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধিত কুরিয়ার ও মেইলিং সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান। 

কোম্পানি আইন ১৯৯৪ অনুযায়ী নিবন্ধিত কোম্পানি। 

মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটরের এজেন্ট। 

ইন্সুইরেন্স কোম্পানির এজেন্ট, স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠান। 

এজেন্ট ব্যাংকিং এর সুবিধা কি কি? 

এজেন্ট ব্যাংকিং সম্পর্কে আমরা অনেক কিছু জানলাম। এখন এজেন্ট ব্যাংকিং এর সুবিধা সম্পর্কে একটু জানবো। এজেন্ট ব্যাংকিং এর সুবিধা অনেক। আর এই সুবিধার জন্য এজেন্ট ব্যাংকিং এর জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। এজেন্ট ব্যাংকিং এর সুবিধাগুলো হল ঃ

বিভিন্ন ধরনের অ্যাকাউন্ট যেমন, কারেন্ট বা সেভিংস অ্যাকাউন্ট এবং ডিপিএস খুলতে পারবেন।

টাকা জমা করতে পারবেন। 

টাকা উত্তোলন করতে পারবেন।

বৈদেশিক রেমিট্যান্স প্রদান করতে পারবেন। 

যে কোন ধরনের বিল প্রদান করতে পারবেন। 

অনলাইন ব্যাংকিং সেবা প্রদান করা যায়। 

অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স জানতে পারবেন।

সরকারি অনেক ভাতা প্রদান করা যায়। 

বীমা প্রিমিয়াম সংগ্রহ করা যাবে।

ক্লিয়ারিং চেক পেমেন্ট করা যাবে।

 এই সকল সেবা ছাড়াও আরো অনেক সুবিধা আছে যা এজেন্ট ব্যাংকিং দিয়ে থাকে।

এজেন্ট ব্যাংকিং এর অসুবিধা কি? 

এজেন্ট ব্যাংকিং এর যেমন অনেক সুবিধা আছে ঠিক সেই সাথে কিছু অসুবিধাও আছে। তবে আপনাদের জানিয়ে রাখি এই অসুবিধা খুব কম। যেমন ঃ 

একটি ব্যাংক ব্যতীত বা একের অধিক ব্যাংকের এজেন্টশীপ নিতে পারবেন না। মোবাইল ব্যাংকিং এর সবগুলো এজেন্টশীপ যেমন নেয়া যায় কিন্তু এখনে একটির বেশি নেয়া যাবে না। 

এখানে নির্ধারিত কোন লাভ নেই।এখানে কমিশন ভিত্তিতে লাভ দিয়ে থাকে।

বাংলাদেশে কতগুলো এজেন্ট ব্যাংক আছে এবং সেগুলোর নাম কি? 

বর্তমানে বাংলাদেশে সরকারি বেসরকারি ২৯ টি ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং সেবার সাথে যুক্ত হয়েছে। এসব ব্যাংকের বর্তমান এজেন্ট সংখ্যা ব্যাপক। হিসাব অনুযায়ী বর্তমানে বাংলাদেশে ১৩ হাজার ৪৭০ টি এজেন্ট ব্যাংকিং শাখা রয়েছে। এবং আউটলেটের সংখ্যা ১৮ হাজার ৭৭ টি। 

বাংলাদেশে এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা প্রদানকারী ব্যাংকের তালিকা ঃ

01)ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেড এজেন্ট ব্যাংকিং

02)এশিয়া ব্যাংক লিমিটেড এজেন্ট ব্যাংকিং

03)ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড এজেন্ট ব্যাংকিং

04)ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড এজেন্ট ব্যাংকিং

05)আল আরাফাহ ব্যাংক লিমিটেড এজেন্ট ব্যাংকিং

06)ইউসিবি ব্যাংক লিমিটেড এজেন্ট ব্যাংকিং

07)সিটি ব্যাংক লিমিটেড এজেন্ট ব্যাংকিং

08)মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেড এজেন্ট ব্যাংকিং

09)এবি ব্যাংক লিমিটেড এজেন্ট ব্যাংকিং

10)ওয়ান ব্যাংক লিমিটেড এজেন্ট ব্যাংকিং

11)এনআরবি ব্যাংক লিমিটেড এজেন্ট ব্যাংকিং

12)সোশ্যাল ইসলামিক ব্যাংক লিমিটেড এজেন্ট ব্যাংকিং

13)সাহজালাল ইসলামিক ব্যাংক লিমিটেড এজেন্ট ব্যাংকিং

14)অরণী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং

15)সোনালী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং

16)পূর্বালী ব্যাংক লিমিটেড এজেন্ট ব্যাংকিং

17)মধুমতি ব্যাংক লিমিটেড এজেন্ট ব্যাংকিং

18)ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড এজেন্ট ব্যাংকিং

19)এক্সিম ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং

20)মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক (MTB) এজেন্ট ব্যাংকিং

21)প্রিমিয়ার ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং

22)মিডল্যান্ড ব্যাংক (MDB) এজেন্ট ব্যাংকিং

23)দক্ষিণ -পূর্ব ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং

24)স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং.

admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *