Bangla Sad love stories 2022. বাংলা স্যাড ভালোবাসার গল্প ২০২২।
Bangla Sad love stories 2022. বাংলা স্যাড ভালোবাসার গল্প ২০২২।
ছেলেটি নিজের ব্যাপারে ভীষণ কেয়ারলেস।
কিন্তু আমাকে পাগলের মত ভালবাসে।এক বছর ধরে আমার পিছে লেগে আছে।
এমন পাগল টাইপের ছেলেকে আমি নিজের সংগি হিসেবে বেছে নিতে চাইতাম না।আমি জীবনের প্রতিটা সিদ্ধান্তের ব্যাপারে খুব সিরিয়াস।কিন্তু তার এমন অধ্যবসায়ী ভালবাসার কাছে হার মানতেই হলো।
আজ থেকে শুরু হলো আমার ও তন্ময়ের ভালোবাসার গল্প।
আমি রাজি হয়েছি বলে তন্ময়ের আনন্দ যেন আর ধরেই না।ওকে দেখে মনে হচ্ছে ও পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ!
তবুও আমি চিন্তা করছি,সিদ্ধান্ত টা কি সঠিক হয়েছে? আমার কাছে ভালবাসা মানে কোনো ছেলেখেলা নয়।
পরবর্তী জীবনে কোনো সমস্যা হবে না তো? ছেলেটি যে একদম অবুঝের মত।
দাড়িয়ে দাড়িয়ে এসব ভাবছি।তন্ময় আমাকে চমকে দিয়ে বলল,কি ভাবছেন?
– আপনার সাথে ভবিষ্যৎ জীবনে মানিয়ে নিতে পারবো কি না?
– এত ভেবে কি ভালবাসা হয়?
– এ ব্যাপারে আমি অনেক সিরিয়াস।দুদিন পর ব্রেকাপ হবে সে ধরনের সম্পর্ক আমি চাইনা।
– আপনি বড় অদ্ভুত! এক টা বছর ধরে শুধু আপনাকে ই ভালবেসেছি।আপনি তো সব বুঝেন। তাহলে এভাবে চিন্তা করছেন কেন? আপনি যদি আরেকজন ছেলের হাত ধরে চলে যান তবুও আমি আপনাকে ই ভালবাসবো।
– এটা ই তো আমার ভয়।এতবেশি ভালবাসা ভয়ংকর।
তন্ময় বলল,আমি আপনাকে ভয়ংকর ভাবে ভালোবাসি।ব্রেকাপ হওয়ার জন্য ছেলে লাগে,আমি তেমন নই।
– হুম,সে তো জানি।কিন্তু আপনি তো আমাকে ছাড়া কিছু বুঝেন বলে মনে হয়না।আমার জন্যই মাস্টার্স এ ভর্তি হলেন না।শুধুমাত্র এলাকায় থেকে আমাকে প্রতিদিন দেখার জন্য একটা বছর নষ্ট করলেন।
তন্ময় বলল,তাতে কি হয়েছে?
– অনেক কিছুই হয়েছে।যাদের লাইফে কোনো লক্ষ্য নেই,তাদের সাথে আমি মিশি না।
– আমার লাইফে লক্ষ্য আছে,সেটা হচ্ছে আপনাকে সুখে রাখা।
আমি অবাক হয়ে তন্ময়ের দিকে তাকালাম। এই ছেলেটা এমন কেন! কিছুই বুঝতে চায়না।ঘুরেফিরে শুধু বলে, ” ভালবাসি “
রাত্রিবেলা শুয়ে শুয়ে চিন্তা করছি।একবার হ্যা বলে দিয়েছি মানে এর থেকে আর বেড়িয়ে আসা যাবেনা।যদি বেড়িয়ে আসতে চাই,তন্ময় অনেক কষ্ট পাবে।দেখাই যাক না,ওকে নিজের মত করে গড়ে তুলতে পারি কি না।ভালবাসা দিয়ে নাকি সবই সম্ভব? আজকাল এমন ভালবাসা লাখে একটা জুটবে।যা হওয়ার হোক,হাত ধরেছি যখন আর ছাড়ব না।
এমন সময় মোবাইল টা বেজে উঠল।
তন্ময় কল দিয়েছে।রিসিভ করে বললাম,হ্যা বলুন।
– আপনাকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছে।
– ভিডিও কল দিচ্ছি।
– না না।
– কেন?
– ওটা ভার্চুয়াল, ওতে আমার শান্তি হবেনা।
– শান্তির জন্য কি এতরাতে বাইরে বের হবো?
– ওটা আমার জন্য আকাশ কুসুম কল্পনা।তাই ভাবতেও চাইনা।তবে যদি একবার বেলকুনিতে আসতেন।
– এতরাতে আপনি আবার আসবেন?
– কষ্ট হবেনা আমার।শুধু একবার দেখবো।আমি কল দিলেই একবার বেলকুনিতে আসবেন।
তন্ময় কথা টা বলেই কল কেটে দিলো। বাইরে প্রচণ্ড শীত,এই কুয়াশায় ও আসবে এটা ভাবতেই পারছি না।ছেলেটি আমাকে এভাবে ভালবাসে কেন আমি বুঝিনা।
তন্ময়ের কল পেয়ে বেলকুনিতে আসলাম।কুয়াশার মধ্যে ও দাড়িয়ে আছে।গায়ে চাদর জড়ানো।বৃস্টির মত কুয়াশা পড়ছে। আমার কেমন যেন মায়া লাগছে।একবার ওর কাছে যেতে ইচ্ছে করছে।
ইচ্ছে টাকে এড়ানো গেল না।ছুটে বাইরে বেড়িয়ে আসলাম।
তন্ময় অবাক হয়ে বলল,আপনি বাইরে এলেন কেন? বাসার কেউ বুঝতে পারলে আপনার বিপদ হবে।
– কিচ্ছু হবেনা।আমার পরিবারে কেউ কারো কাজে ইন্টারফেয়ার করেনা।আপনি এভাবে বেশিক্ষণ থাকবেন না।বাসায় চলে যান।
– কি যে ভালো লাগছে আপনাকে দেখার পর।সব কষ্ট দূর হয়ে গেছে।আপনি যদি আমার চোখের সামনে থাকেন, তাহলে সারারাত এভাবে দাড়িয়ে থাকবো।
– ইস,লাগবে না এতপ্রেম।আর আমাকে আপনি করে বলবেন না।তুমি করে বলবেন।
– সত্যি!
– হ্যা,
তন্ময় খুশি হয়ে বলল,আচ্ছা।একটা কাজ করলে তুমি কি রাগ করবে?
– না,কি কাজ?
– আমি কি তোমাকে একবার স্পর্শ করতে পারি?
আমি চমকে উঠলাম।অবাক হয়ে বললাম,স্পর্শ বলতে?
– ভয় পেও না।আমি সবসময় ই তোমাকে সর্বোচ্চ সম্মানে রাখবো।আমি শুধু তোমার পায়ে একবার হাত রাখতে চাই।
– পা! কি বলছেন এসব?
– ভয় পাবেনা,আমি তোমাকে খুব সম্মান করি।
কথা টা বলেই তন্ময় আমার পায়ের কাছে বসে পড়ল। আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি।কি বলছে কিছুই বুঝতে পারছি না।এখন আমাকে সালাম করতে চাচ্ছে নাকি?
কিছু বুঝে উঠার আগেই তন্ময় আমার ডান পা তুলে ওর হাটুর উপরে রাখলো।আমার কেমন যেন ভয় ভয় লাগছে।
তন্ময় খুব যত্নে আমার পায়ে একটা পায়েল পড়িয়ে দিলো!
আমি মুগ্ধ! ছেলেটি এত পাগল কেন?
তন্ময় বলল,খুব মানিয়েছে পায়েল টা।
আমি বললাম,থ্যাংকস।
ও উঠে দাড়িয়ে বলল,থ্যাংকস বলে ছোট করবা না।খুব কুয়াশা পড়ছে, তুমি ঘরে যাও।
– যাবো, আপনি চলে যান এখন।
তন্ময় বলল,তুমি কি ভয় পেয়েছিলে? আমাকে তুমি তোমার বাবার পরেই বিশ্বাস করতে পারো। আমি কখনো তোমাকে অসম্মান করবো না।কোনোদিন ও খারাপ মতলবে স্পর্শ করবো না।
আমি খুব অবাক হয়ে গেছি।আজ আমার নিজেরি তন্ময়ের প্রতি অনেক মায়া কাজ করছে।এই ছেলেটিকে একটা বছর কষ্ট দিয়েছি! ইস,আরো আগে কেন ভালবাসিনি?
তন্ময় বলল,কি ভাবছ? তোমার জ্বর হবে তো। যাও এখুনি রুমে যাও।বেলকুনিতে এসে একবার হাসি দিবা,আমি দেখেই চলে যাবো।
আমি ছুটে বাসায় এসে বেলকুনিতে চলে আসলাম। তারপর হেসে বিদায় জানালাম।তন্ময় ও মুচকি হেসে চলে গেলো।
খুব প্রশান্তির ঘুম হলো আমার।মনে হচ্ছে এত আরামে কখনো ঘুমাই নি।ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে পড়তে বসলাম।
বারবার রাতের স্মৃতি টা মনে পড়ছে। অচেনা এক অনুভূতিতে ছেয়ে গেছে মনটা।
তন্ময়ের কয়েক টা কথা মাথায় ঘুরছে” তোমার বাবার পরেই আমাকে বিশ্বাস করতে পারো,কখনো খারাপ মতলবে স্পর্শ করবো না,তোমাকে সর্বোচ্চ সম্মান করি” কথা গুলো ভেবে তন্ময়ের প্রতি শ্রদ্ধা জেগে উঠছে।
.
নাস্তা করে কলেজের উদ্দেশ্যে বের হলাম।
অটোর জন্য দাড়িয়ে থাকলাম অনেক্ষন।রাস্তা একেবারেই ফাকা,অটো কতক্ষনে পাবো কে জানে!
ক্লাসের সময় হয়ে আসছে।এভাবে কতক্ষণ দাড়িয়ে থাকা যায়!
তন্ময় কে কল দিয়ে বললাম,বাইক নিয়ে চলে আসতে।
পাচ মিনিটের মধ্যেই তন্ময় এসে হাজির।
আমি ওর বাইকে উঠবো শুনে অনেক্ষন হা করে তাকিয়ে রইলো।
বললাম,কলেজে ক্লাস শুরু হবে।যেতে হবে এখুনি।
– তুমি সত্যিই আমার বাইকে উঠবা! I can’t believe.
– বিলিভ করতে হবেনা।তাড়াতাড়ি চলো।
আমি বাইকে উঠে বসলাম। তন্ময় খুব সাবধানে আর ধীরে বাইক চালাচ্ছে।
আমি বললাম,এত স্লো কেন? এমনি তে তো প্রতিদিন খুব দ্রুত যেতে দেখি।
– আজ তুমি আছো।তোমাকে নিরাপদে পৌছে দেয়া টা আমার দায়িত্ব।
– বাব্বাহ! বেশ ভালো। কিন্তু অন্যান্য ছেলেদের দেখি মেয়ে পিছনে থাকলে বাইকের গতি বেড়ে যায়।
– আমি তো তাদের মত বয় ফ্রেন্ড নই,আমি প্রেমিক।আমার দায়িত্ব আছে না?
আমি হেসে বললাম,কিচ্ছু হবেনা।সকালে খেয়েছ?
– না,তোমার ফোনেই ঘুম ভাঙল।
– বাসায় গিয়ে খেয়ে নিবা।আর ক্লাস শেষ হলে কল দিবো। ফ্রি থাকলে আমাকে বাসায় নামিয়ে দিও।তাহলে আমার ত্রিশ টাকা বেচে যাবে।
– আচ্ছা।
তোমার জন্য আমি আজীবন ফ্রি।তুমি চাইলে প্রতিদিন ই রেখে আসবো। তাহলে রোজ তোমার ত্রিশ টাকা বেচে যাবে।
– আচ্ছা,ওই ত্রিশ টাকা গুলা জমিয়ে রাখবো। যেদিন অনেক গুলা টাকা হবে সেদিন বড় কিছু করবো।
তন্ময় হেসে বলল,আচ্ছা আচ্ছা।
.
রাত্রিবেলা
পড়া শেষ করে উঠে তন্ময় কে ফোন দিলাম।
ও বলল,কি করছ?
– তোমাকে একবার দেখবো। একবার আসতে পারবা?
তন্ময় নিশ্চুপ,হয়ত বিস্ময়ে কথা বলতে পারছে না।
আমি নিজেই অবাক হয়ে গিয়েছি।জানিনা কেন বললাম কথা টা! তবে কি আমিও ওকে ধীরে ধীরে ভালবেসে ফেলছি!
তন্ময় এসেছে।খুব সাবধানে বাসার বাইরে চলে আসলাম।
ও বলল,এতরাতে বাইরে এসেছ,তোমার অসুবিধা হবে না তো?
– নাহ,বরং বেশ ভালো লাগছে।তোমার কি এই শীতে আসতে কষ্ট হয়েছে?
– একদম ই না।তোমার দর্শনের কাছে এইসব কষ্ট একেবারেই তুচ্ছ।
আমি খুব জোরে হেসে উঠলাম। তন্ময় বলল,হাসছ যে?
– তুমিও হাসো।
– কেন?
– আমি বলছি তাই,হাসো।
তন্ময় ও হেসে উঠল।
তারপর হঠাত ই আমার হাত ধরে হাতে একটা ব্রেসলেট পড়িয়ে দিলো।
আমি অবাক হয়ে বললাম,পকেটেই রাখো তাইনা?
– কেন জানি মনে হয় তুমি একবার বাইরে আসবা।তাই নিয়ে আসি।
– খুব সুন্দর!
– পছন্দ হয়েছে?
– হ্যা খুউউব।
আমার হাসি মুখ দেখে তন্ময় ও খুব খুশি হয়েছে।
আমি বললাম,এবার যাও।আজ একটু বেশিই কুয়াশা পড়েছে।
– অসুবিধা নেই।তুমি তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে যেও।
– উহু,আজ অনেক রাত অব্দি ফোনে কথা বলবো।
– না বলবো না।
আমি অবাক হয়ে বললাম,কেন!
– কারন ফোনে বেশি কথা বললে সামনাসামনি কথা বলার আনন্দ টা থাকবে না।কথাগুলা জমিয়ে রাখবো, দেখা হলে বলবো।
– অদ্ভুত! মানুষ দেখা না করেই ফোনে প্রেম করে দুয়েক বছর। আর তুমি!
তন্ময় হেসে বলল,সে বলুক।আমি দেখা হলেই সুখী হই।এবার তুমি রুমে যাও।
আমি আর কথা না বাড়িয়ে রুমে চলে আসলাম।
.
এভাবেই চলতে লাগলো আমাদের ভালবাসা।
প্রতি রাতে আমি ফোন দিয়ে তন্ময়কে আসতে বলতাম।
দূরে আলো জ্বলত,ঘন কুয়াশায় চাদর গায়ে জড়িয়ে তন্ময়ের পবিত্র মুখ খানি দেখতে বড় ভালো লাগত।
রোজ রাতেই তন্ময় আমার জন্য পায়েল,নুপুর, ব্রেসলেট, ঘড়ি,কানের দুল,সানগ্লাস,চুরি, ওড়না, কিংবা কোনো রাতে শাড়ি ও নিয়ে আসত।অনেক বাধা দিলেও শুনত না।এভাবে ওর দেয়া অনেক গিফট জমে গেছে আমার ঘরে।
আমি কখনো ওকে কিছুই দিতে পারিনি।তন্ময় বলতো,তুমি শুধু আমাকে ভালোবেসো তাতেই আমার স্বর্গ।
.
আমি অসুস্থ হলে তন্ময় এসে আমার ঘরে বসে থাকত।
একদিন জ্বরের ঘোরে ভয়ংকর স্বপ্ন দেখে ঘুম ভেঙে যায়।
তন্ময় কে কল দিয়ে বললাম,আমার খুব ভয় করছে।
– আম্মুকে ডেকে নিয়ে আসো।আর বলো মাথায় জল পটি দিয়ে দিতে।
আম্মুর প্রেশার বেড়েছে। তুমিতো জানো আম্মু হাই প্রেশারের রোগি।আম্মুকে ডাকবো না।
– বাসায় কেউ নেই জলপটি দিয়ে দেয়ার মত? মাথায় পানি দেয়া দরকার ছিল।তোমার শরীর খুব খারাপ।
– বাসায় কেউ নেই।আব্বুকে কি আর সেবা করতে বলবো?
তন্ময় কিছু না বলেই ফোন কেটে দিলো।
আমার চোখে ঘুম লেগে এসেছে।আম্মুর ডাকে চোখ মেলে দেখি তন্ময় দাড়িয়ে!
আমি অবাক হয়ে গেলাম।আব্বু আম্মু কি যে ভাবছে কে জানে!
আমাদের সবাইকে অবাক করে দিয়ে তন্ময় আমার শিয়রে বসে আমার কপালে জলপটি দিতে শুরু করলো।
আমার চোখে পানি এসে গেছে।আব্বু আম্মুর চোখে মুগ্ধতা!
আব্বু বলল,আমাদের মেয়েকে কেউ আমাদের মতই ভালোবাসে এটা ভাবতেই অবাক লাগছে।
কে কি বলছে তাতে তন্ময়ের মনোযোগ নেই।ও খুব যত্নের সাথে আমার জ্বর মেপে দেখার পর ওষুধ খাইয়ে দিলো,
সারারাত আমি জ্বরের ঘোরে রইলাম।একটু পরপর চোখ মেলে দেখছি আব্বু ও তন্ময় দুজনেই আমার ঘরে বসে আছে।আম্মু আমার পাশেই ঘুমিয়ে পড়েছে।
মনে হচ্ছে তন্ময় আমার পরিবারেরই একজন।
আমার চিন্তা হচ্ছে, আব্বু আম্মু তন্ময়ের ব্যাপারে কিছুই জানেনা।তারা তন্ময়কে কিভাবে গ্রহণ করেছে জানিনা।
সকাল হতেই আমার জ্বর কমে গেলো।
ভালভাবে তাকিয়ে দেখি তন্ময় আমার শিয়রেই বসে আছে।ওর চোখ ভয়াবহ লাল!
আমি চোখ মেলার পর নিজেই খাবার নিয়ে এসে খাইয়ে দিলো।
আব্বু আম্মু অবাক হয়ে দেখছে।কেউ কিছু বলছে না।
আমার জ্বর একেবারেই কমে গেছে।
তন্ময় আব্বুর সামনে মাথা নিচু করে দাড়িয়ে বলল,আমাকে মাফ করবেন আব্বু।আমি মিশুর অসুস্থতায় চুপ করে বসে থাকতে পারিনি।আপনাদের চোখে হয়ত বেয়াদবি হয়ে গেছে।আমাকে শাস্তি দিন।
আব্বু তন্ময় কে বুকে টেনে নিয়ে বলল,আরে পাগল ছেলে,কিসের বেয়াদবি?
আমি তো হাজার জীবন তপস্যা করলেও এমন করে কাউকে ভালবাসতে পারবো না।আমি জানি তোমরা একে অপরকে খুব ভালবাসো,তাই মুগ্ধ হয়ে দেখছিলাম।এমন ভালবাসায় বাধা দেয়ার ক্ষমতা আমার নেই।
আমি অবাক হয়ে আব্বু দিকে তাকালাম।
আব্বু বলল,মিশুকে কয়েকদিন রাতে তোমার সাথে দেখা করতে দেখেছি।মিশু নিজেও জানেনা।আমি এতেই অবাক হচ্ছি যে,মেয়েটাকে একা পেয়েও তুমি কখনো ওর শরীরে হাত দাওনি।
কিন্তু এখনকার ছেলেরা প্রেম বলতেই ফিজিক্যাল রিলেশন বুঝে।তোমার মাঝে তেমন উদ্দেশ্য নেই বরং প্রতিদিন ই কিছু না কিছু গিফট নিয়ে এসেছ।আজকাল এমন ছেলে হয়না বাবা।আমি তোমাকে স্যালুট করছি।
আমি বিস্ময়ে আব্বুর দিকে তাকিয়ে আছি! চোখে পানি এসে যাচ্ছে!
তন্ময়ের চোখ খুশিতে উজ্জ্বল হয়ে উঠছে!
আমি উঠে এসে বললাম,আব্বু তুমি খুব ভালো।
আব্বু বলল,তন্ময় তুমি খেয়ে নাও।তারপর ঘুমাও,সারারাত জেগে ছিলা।
.
তন্ময় বাসায় যেতে চেয়েছিল।আব্বু আম্মু যেতে দেয়নি।
ও খাওয়ার পর পাশের রুমে ঘুমিয়ে পড়ল।
আমি নিঃশব্দে সে ঘরে প্রবেশ করলাম।
তন্ময় গভীর ঘুমে মগ্ন,আমি শিয়রে বসে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি।
খুব মায়াবী ওর মুখ টা! ছেলেটা পাগলের মত ভালবেসে সত্যিই আমাকে অনেক সুখে রেখেছে।
এমন ভালোবাসা আজকাল গল্পেই পাওয়া যায়।কিন্তু বাস্তবেও এমন বাবা মা আর একজন তন্ময় পেয়েছি যে আমার ভাবনাতেই তন্ময় হয়ে থাকে।আমি সত্যিই খুব সুখী,গল্পের মত ভালোবাসা পেয়েছি!
ভালবাসি বাবা মা তোমাদের,ভালোবাসি আমার পাগল তন্ময় টাকে!!