ইন্টারনেট ব্যাংকিং কি? ইন্টারনেট ব্যাংকিং এর সুবিধা অসুবিধা কি কি? What Is Internet Banking?

ইন্টারনেট ব্যাংকিং কি? ইন্টারনেট ব্যাংকিং এর সুবিধা অসুবিধা কি কি? 

ইন্টারনেট ব্যাংকিং কি? 

ইন্টারনেটের মাধ্যমে সাধারণ ব্যাংকিং কার্যক্রমকে পরিচালনা করার মাধ্যমকে ইন্টারনেট ব্যাংকিং বা অনলাইন ব্যাংকিং বলা হয়। এর কারণ হল এই ব্যাংকিং কার্যক্রমটা সাধারণত অনলাইনে অর্থাৎ ইন্টারনেটের মাধ্যমে কোন ব্যাংকের নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে গিয়ে করতে হয়। আপনার মোবাইল,  ল্যাপটপ বা ডেক্সটপে ইন্টারনেট কানেকশন অন করে ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। এরপর সেখানে একটি অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। অ্যাকাউন্ট খোলার পর আপনি একটি ইউজার নেম এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে সেই অ্যাকাউন্টে লগইন করতে পারবেন। 

কিভাবে ইন্টারনেট ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট খুলব?

ইন্টারনেট ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য প্রথমে সেই ব্যাংকে গিয়ে একটি অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। অ্যাকাউন্ট খোলার পর আপনি ব্যাংক ম্যানেজারের কাছে বলতে হবে আপনি ইন্টারনেট ব্যাংকিং এর একটি অ্যাকাউন্ট খুলতে চান বা ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবা গ্রহণ করতে চান। 

তারপর ম্যানেজার বা ব্যাংক  অফিসার আপনাকে আরেকটি ফর্ম দিবে। আপনাকে সেই ফর্ম ফিলাপ করে তাদের কাছে জমা দিতে হবে। তারা সবকিছু চেক করে দেখবে।যদি সবকিছু ঠিক থাকে তবে তারা ৪ থেকে ৫ দিন পর আপনাকে একটি ইউজার নেম এবং পাসওয়ার্ড দিবে। 

আরো পড়ুন ঃ ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন এ কিভাবে টাকা পাঠাবেন?

সেই ইউজার নেম এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে ব্যাংকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে লগইন করতে হবে। লগইন করার পর আপনার পছন্দ অনুযায়ী নতুন পাসওয়ার্ড সেট করতে হবে। যাতে অন্য কেউ আপনার অ্যাকাউন্টে লগইন করতে না পারে। আপনি ব্যাংকে না গিয়ে ইন্টারনেট ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টে লগইন করে আপনার প্রয়োজনীয় কাজ আপনি ঘরে বসে নিজে নিজেই করতে পারবেন। 

ইন্টারনেট ব্যাংকিং এর সুবিধা কি কি? 

বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যাংকিং মাধ্যম হল ইন্টারনেট ব্যাংকিং। এই ব্যাংকিংয়ের অনেক সুবিধা আছে। আর তাই ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের ব্যাবহারকারী দিন দিন বাড়ছে। বিশেষ করে বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস হানা দেয়ার পর থেকে ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের চাহিদা অনেকগুন বেড়ে গেছে। ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের সুবিধাগুলো হল ঃ

যেকোনো সময় আপনি চাইলেই আপনার অ্যাকাউন্টে লগইন করে আপনার প্রয়োজনীয় কাজ করতে পারবেন। 

যেকোনো সময় আপনার অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স চেক করতে পারবেন। 

আপনি নিজেই আপনার ফান্ড ট্রান্সফার করতে পারবেন। 

যেকোনো ধরনের বিল আপনি নিজেই প্রদান করতে পারবেন। 

বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার অনুসন্ধান করতে পারবেন। 

চেক বই এর জন্য রিকোয়েস্ট করতে পারবেন। 

বিভিন্ন ডিপোজিট স্কিম খুলতে পারবেন। 

আপনার খরচ এবং সময় দুটিই বেচে যাবে।

ব্যাংকে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না।

এছাড়া আরো অনেক সুবিধা আপনি গ্রহণ করতে পারবেন। 

ইন্টারনেট বা অনলাইন ব্যাংকিং এ কি কি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে? 

আপনি যদি ইন্টারনেট বা অনলাইন ব্যাংকিং গ্রাহক হয়ে থাকেন তবে আপনাকে কিছু সতর্কতা সম্পর্কে জানতে হবে এবং সেগুলো মেনে চলতে হবে। না হলে আপনার অনেক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তাই যেসকল সতর্কতা মেনে চলতে হবে ঃ

অ্যাকাউন্ট নিরাপত্তায় কঠিন পাসওয়ার্ড দিতে হবে, যাতে সহজে কেউ হ্যাক করতে না পারে।

মোবাইল এসএমএস এবং ইমেইল নোটিফিকেশন চালু রাখতে হবে, যাতে কোন লেনদেন হলে আপনার কাছে নোটিফিকেশন আসে বা আপনি বুঝতে পারেন।

নিবন্ধনকৃত সিম ব্যাংকিংয়ের সাথে যোগ করুন, যাতে সিম হারিয়ে গেলে আবার তুলতে পারেন।

নিয়মিত ব্যাংক স্টেটমেন্ট চেক করুন।

প্রতিবার লগইন করে কাজ শেষ হবার পর লগআউট করুন।

ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের অসুবিধা কি কি?

ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের সুবিধার চেয়ে অসুবিধা কম। ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের যেসব অসুবিধা থাকতে পারে তা হলঃ 

আপনার কাছে সবসময়ই ইন্টারনেট সংযোগ থাকতে হবে। ইন্টারনেট না থাকলে আপনি কোন কাজ করতে পারবেন না।

অ্যাকাউন্ট হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে টাকা চুরি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। 

পাসওয়ার্ড মনে রাখার মত ঝামেলা পোহাতে হয়। 

বাংলাদেশে কতগুলো ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান আছে? 

ইন্টারনেট ব্যাংকিং জনপ্রিয়তার সাথে সাথে ব্যাংকিং সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান দিন দিন বাড়ছে। বাংলাদেশে যতগুলো ব্যাংক আছে তার সবগুলোই বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবা দিয়ে থাকে। ধারণা করা হয় অদূর ভবিষ্যতে ইন্টারনেট ব্যাংকিং এর জনপ্রিয়তা কয়েক গুন বেড়ে যাবে। আর তাই ব্যাংক মালিকদের ইন্টারনেট ব্যাংকিং এর প্রতি আরো বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। 

আরো পড়ুন ঃ মোবাইল ব্যাংকিং কিভাবে ব্যবহার করবেন বিস্তারিত? 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *