বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর ১০ টি দর্শনীয় স্থানের নাম কী?
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি হল বাংলাদেশ। আয়তনের দিক দিয়ে আমাদের দেশ খুব ছোট। কিন্তু আমাদের এই ছোট দেশেও যে অনেক দর্শনীয় স্থান আছে তা আমাদের অনেকেরই অজানা। তাই অজানাকে জানতে হবে, অদেখাকে দেখতে হবে। আজকে এই আর্টিকেলে বাংলাদেশের ১০ টি দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে জানাতে চেষ্টা করব। যাতে আপনারা খুব সহজে এই স্থানগুলো ঘুরতে পারেন কোন ঝামেলা ছাড়া। আজকে যেই ১০ টি স্থানের নাম জানাব তা হল ঃ
নাম্বার ১০
রবি ঠাকুরের কুঠির বাড়ি ঃ
রবিন্দ্রনাথের স্মৃতি বিজরীত একটি ঐতিহাসিক স্থান ও পর্যটন কেন্দ্র হল এই কুঠির বাড়ি। এটি কুস্টিয়া জেলার কুমারখালিতে পদ্মা নদীর তীরবর্তী স্থানে অবস্থিত। নদীর ওপারে পাবনা শহর এবং এই পারে এটি। কুঠির বাড়িতে আসলে আপনি রবিন্দ্রনাথের ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিসপত্র দেখতে পাবেন। এই বাড়ির চারপাশে প্রচুর ফলের গাছ দেখতে পাবেন। বিশেষ করে আম গাছ বেশি দেখতে পাবেন। গাছগুলো অনেক পুরোনো। এই গাছের নিচে বসে তিনি কবিতা লিখতেন।
নাম্বার ৯
ঝুলন্ত ব্রীজ খাগড়াছড়ি ঃ
সৃষ্টিকর্তা অপার সৌন্দর্যে সাজিয়েছে এই খাগড়াছড়িকে। এখানে আপনি ঝুলন্ত ব্রীজের অপরূপ সৌন্দর্য্য উপোভোগ করতে পারবেন। এছাড়াও এখানে আপনি খুব সুন্দর পাহাড়ি ঝর্না দেখতে পারবেন। এর মধ্যে রিচাং ঝর্না অন্যতম। এটি অনেক উপর থেকে নেমে এসে মাটিতে পতিত হয়েছে।
নাম্বার ৮
লালন শাহ মাজার ঃ
কুস্টিয়া জেলার অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র হল এই লালন শাহ মাজার। ফকির লালন শাহের স্মৃতি জড়িত এই মাজারে এলে অনেক কিছু দেখতে পাবেন। এছাড়া খুব কাছেই দেখতে পাবেন বাংলাদেশের একমাত্র রেলসেতু হার্ডিঞ্জ ব্রিজ। এটি বৃটিশ আমলের নির্মিত একটি রেলসেতু। পাশেই দেখতে পাবেন লালন শাহ সেতু। উপর থেকে পাশাপাশি দুটি ব্রীজ দেখতে খুব অসাধারণ লাগে।
নাম্বার ৭
জাফলং সিলেট ঃ
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার অর্ন্তগত একটি পর্যটন কেন্দ্র হল জাফলং। সিলেট শহর থেকে ৬২ কিলোমিটার উত্তর পূর্ব দিকে ভারতের মেঘালয় সিমান্ত ঘেঁষে এর অবস্তান। এটি নদী এবং পাহাড়ের অপূর্ব সম্মিলন বলে এই এলাকা বাংলাদেশের অন্যতম একটি পর্যটন স্থল। জাফলং পাথরের জন্যও বিখ্যাত। জাফলং এর বাংলাদেশ সীমান্তে দাড়ালে ভারতের উচু উচু পাহাড় শ্রেনী দেখা যায়।এসব পাহাড় থেকে নেমে আসা ঝর্না পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষন।
নাম্বার ৬
কুয়াকাটা ঃ
সাগরকন্যা খ্যাত কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত বাংলাদেশের দক্ষিনাঞ্চলের পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলায় অবস্থিত। এই সৈকতটি ১৮ কিলোমিটার লম্বা। এই সৈকতের প্রধান আকর্ষণ হল খুব ভোরে সমুদ্রের বুক চিরে সুর্যোদয় এবং সন্ধ্যাবেলা সমুদ্রের বুকে সুর্যের হারিয়ে যাওয়া। এখানে সারা বছর পর্যটকদের ভীড় লেগেই থাকে।এছাড়া শীতকালে প্রচুর অতিথি পাখি দেখা যায়।কুয়াকাটাকে সাদা বালির সৈকত ও বলা হয়।
নাম্বার ৫
মিঠামইন কিশোরগঞ্জ ঃ
বর্ষায় নাও আর শুকনায় পাও অর্থাৎ বর্ষাকালে নৌকায় আর শুকনো মৌসুমে পায়ে হেটে চলো। তবে আনন্দের খবর হল এখন আর সেই সময় নেই। এখন হাওর এলাকায় সারা বছর চলাচলের জন্য তৈরি হয়েছে উচু রাস্তা। তাদের মধ্যে অন্যতম হল ইটনা মিঠামইন ও অস্টাগ্রাম সড়ক। যা এখন বর্ষাকালে পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ। হাওর এলাকার এই সড়কের দূরত্ব হল ৪৭ কিলোমিটার উচু পাকা সড়ক এবং ৩৫ কিলোমিটার সাবমার্সিবল সড়ক। আশেপাশের কিছু দর্শনীয় স্থান হল মিঠামইন হাওর অস্টাগ্রাম হাওর এবং নিকলী হাওর।
নাম্বার ৪
নীলগিরি বান্দরবান ঃ
অপরূপ সৌন্দর্য্যের লীলাভূমি হল বান্দরবানের নীলগিরি। দেশের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র নীলগিরি বান্দরবানের থানছি উপজেলায় অবস্থিত। মেঘের সাথে মিতালি করে এখানে মেঘ ছোয়ার সুযোগ রয়েছে। শুস্ক মৌসুমে নীলগিরিতে সূর্যদয় এবং সূর্যাস্ত অপরুপ।
নাম্বার ৩
সুন্দরবনঃ
সুন্দরবন বাংলাদেশের বঙ্গোপসাগরের উপকূলে অবস্থিত একটি ম্যানগ্রোভ বন। যা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন। পদ্মা, মেঘনা ও ব্রক্ষপুত্র নদীর অববাহিকার বব্দীপ এলাকায় অবস্থিত। এটি দেশের খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাটের, পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলা জুরে বিস্তৃত। প্রতি বছর এই বন দেখতে হাজার হাজার পর্যটক এখানে ভীড় জমায়। বন বিভাগের হিসাব মতে সুন্দরবনে ৪৫০ টি রয়েল বেঙ্গল টাইগার রয়েছে। এছাড়া এখানে প্রচুর হরিণ এবং বানর রয়েছে।
নাম্বার ২
কক্সবাজার সি বীচ ঃ
এটি কক্সবাজারে অবস্থিত একটি সমুদ্র সৈকত। ১৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সমুদ্র সৈকত পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত। তবে ব্রাজিলে ২২২ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি সৈকত আছে।কিন্তু সেখানের কিছু অংশ মনুষ্য সৃষ্টি। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র। প্রতিদিন অসংখ্য পর্যটক এই সৈকতে আসে। এই সৈকতের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি স্থান হল কলাতলী পয়েন্ট, সুগন্ধা পয়েন্ট, লাবনী পয়েন্ট, দরিয়ানগর পয়েন্ট, ইনানী সৈকত, টেকনাফ সৈকত, হিমছড়ি সৈকত ইত্যাদি।
নাম্বার ১
সেন্টমার্টিন ঃ
বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের উত্তর পূর্বাংশে অবস্থিত ছোট্ট একটি প্রবাল দীপ। মাত্র আট বর্গ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে এটি বিস্তৃত। এটি কক্সবাজার জেলার টেকনাফ থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং মায়ানমার এর উপকূল হতে ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে নাফ নদীর মোহনায় অবস্থিত। এখানে প্রচুর নারিকেল পাওয়া যায় বলে একে নারিকেল জিঞ্জিরা বলা হয়। এই দীপটি একটি জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র। পর্যটন মৌসুমে প্রতিদিন ৫ টি লঞ্চ বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ড থেকে আসা যাওয়া করে।